Tuesday, March 26, 2013

ধর্ম নিরপেক্ষতা সম্পর্কে ইসলাম কি বলে??


আসসালামুআলাইকুম।

বর্তমানে আমরা তরুণ পরেছি এক বিশাল মছিবতে। যেখানে আমাদের অনেকের ইসলাম সম্পর্কে জানার দৌড় শুধু মাত্র দুই এক বছর ধরে মক্তবে বা ২০০ টাকা মাসে দেওয়া কোন এক ছাত্রের নিকটে। আর এই স্বল্প শিক্ষা নিয়েই আমরা চালিয়ে যাচ্ছি তর্ক-বিতর্ক।

তবে আজ আমি অতি সমালোচিত ও ধ্বংসাত্মক একটি বিষয় নিয়ে আমার অল্প জ্ঞানের ভিত্তিতে কিছু বলতে চাচ্ছি। যা নব্য মুসলিমদেরকে এক বিশাল ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। অত:পর তারা কিছু ভ্রান্ত কথাকে পুজি করে তর্ক করেই যাচ্ছে। আর বিষয়টি হল মানব সৃষ্ট কুফরি ধর্ম 'ধর্মনিরপেক্ষতা'।

এই পৃথিবীতে মহান আল্লাহর শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি হল মানুষ। আর মানুষের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ হল মুহাম্মদ (সা:)। মহান আল্লাহ এই মানব জাতিকে হেদায়েতের জন্য যুগে যুগে অনেক নবী-রাসূল প্রেরণ করেছিলেন এই পৃথিবীতে। আর এরই ধারাবাহিকতায় সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ রাসূলের মর্যাদা পেয়েছিলেন মুহাম্মদ (সা:)। আর তার উপর অর্পিত দ্বিন হল ইসলাম। আর এই ইসলাম হল সার্বজনীন ধর্ম। যা মানা প্রত্যেক মানুষের উপর ফরজ। আর যারা মানল না তার নিশ্চিত ক্ষতিগ্রস্তদের কাতারে। এই ধর্মকে অস্বীকার করার কোন অবকাশ নেই। আর যারা ইসলাম ধর্মকে অস্বীকার করবে তারাই কাফির। তাহলে কোথায় যাবে ধর্মনিরপেক্ষতা?
ধর্মনিরপেক্ষতা বলতে কোন ধর্ম নাই। ইসলাম দুনিয়াতে আসার পর অন্য সব ধর্ম বর্জনীয়। আর ইসলাম একমাত্র গ্রহণীয়। এবার যার ইচ্ছে সে ইসলামকে মানবে আর না হয় অন্যসব ধর্ম মানবে। তবে ধর্ম নিরপেক্ষতা বলতে কোন কথা পৃথিবীতে পূর্বেও ছিল না। এটা মানুষের সৃষ্টি। আর এখানে মানুষ স্বয়ং আল্লাহর সাথে challange করে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে চাচ্ছে যা সম্পূর্ণ কুফরী!! এই বিষয়ে একটি আয়াত পেশ করছি,

إِنَّ الدِّينَ عِندَ اللّهِ الإِسْلاَمُ وَمَا اخْتَلَفَ الَّذِينَ أُوْتُواْ الْكِتَابَ إِلاَّ مِن بَعْدِ مَا جَاءهُمُ الْعِلْمُ بَغْيًا بَيْنَهُمْ وَمَن يَكْفُرْ بِآيَاتِ اللّهِ فَإِنَّ اللّهِ سَرِيعُ الْحِسَابِ

"নিঃসন্দেহে আল্লাহর নিকট গ্রহণযোগ্য দ্বীন একমাত্র ইসলাম। এবং যাদের প্রতি কিতাব দেয়া হয়েছে তাদের নিকট প্রকৃত জ্ঞান আসার পরও ওরা মতবিরোধে লিপ্ত হয়েছে, শুধুমাত্র পরস্পর বিদ্বেষবশতঃ, যারা আল্লাহর নিদর্শনসমূহের প্রতি কুফরী করে তাদের জানা উচিত যে, নিশ্চিতরূপে আল্লাহ হিসাব গ্রহণে অত্যন্ত দ্রুত।" (সূরা আল ইমরান-১৯)

এবার একটু পেছনে ফিরে তাকাই, দেখি ফেরআউন এর সৃষ্ট আইন সম্পর্ক ইসলাম কি বলে? হযরত মুসা(আ:) এর নবুওয়্যাত কালে ফেরাউন ছিলেন বাদশাহ। আর সে তার শক্তির এতই অহংকার করত যে নিজেক প্রভু বলেও দাবি করত। আর মহান আল্লাহ তাকে একটু স্বাধীনতা দিয়ে দেখলেন কি করে। আর ফেরাউন সেই স্বাধীনতার সুযোগে কুফরি সহ নানা প্রকার অন্যায়-অত্যাচার করত। আর তাকে মারার জন্য আল্লাহ মুসা (আ:) এর বাহিনীকেই যথেষ্ট করেছিলেন। ফেরাউন তাদেকে ধাওয়া করতে গিয়েই আল্লাহর গজবে পরে। আর মুসা(আ:) এর বাহিনী আল্লাহর সহায়তায় জয়ী হয়। এই প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ বলেন-

وَإِذْ تَأَذَّنَ رَبُّكُمْ لَئِن شَكَرْتُمْ لأَزِيدَنَّكُمْ وَلَئِن كَفَرْتُمْ إِنَّ عَذَابِي لَشَدِيدٌ

"যখন তোমাদের পালনকর্তা ঘোষণা করলেন যে, যদি কৃতজ্ঞতা স্বীকার কর, তবে তোমাদেরকে আরও দেব এবং যদি অকৃতজ্ঞ হও তবে নিশ্চয়ই আমার শাস্তি হবে কঠোর।" (সূরা ইব্রাহীম-৭)

আর এখন দেখবেন মানুষ নিজের হাতে আইন বানিয়ে তৈরি করছে গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, জাতীয়তাবাদ, সম্রাজ্ববাদ আর সর্বপরি ধর্মনিরপেক্ষ। তাদের অবস্হাও ফেরাউনের ন্যায়। তারা নিজেরাই আল্লাহর বিরুদ্ধে ক্ষমতা প্রণয়ন করছে । আর এই ক্ষমতাকে যে কোন সময় মুচড়ে দিতে পারে আর চুড়ান্ত বিজয় এনে দিবে সত্যিকার মুসলিমের হাতেই।

যেহেতু প্রত্যেক জিনিস কোন না কোন প্রেক্ষাপটে গঠিত হয়, তেমনি এই 'ধর্মনিরপেক্ষতা' শ্লোগানের পেছনেও কিছু কারণ স্পষ্ট। ধর্মনিরপেক্ষতা কথাটা মুসলিমের মধ্যে যেই শুরু করুক না কেন সে ইসলামদ্রোহী। যারা এর পক্ষে প্রচার করছে তারা কখনো মুসলিম হতে পারে না কারণ তারাতো ইসলামকে ত্যগই করে ফেলছে। আর এর প্রভাব এখন নামধারী মুসলিমদের উপর বেশ পরছে। তাইতো তারা সিমেন্ট, মাটির খাম্বার পূজাকেও ইসলামে নিয়ে আসতে চাচ্ছে। আর এরকম ইসলামের মধ্যে কুফরি মতবাদ ঢুকিয়ে শিরক সহ ব্যভিচারীতার প্রসার ঘটানোর জন্যেই শয়তানের এই এটম বোমা। যা সত্যিকার মুসলিমদের স্পর্শ করার ক্ষমতা না রাখলেও নামধারী মুসলিমদের জ্বালিয়ে দেয়ার ক্ষমতা রাখে। কারণ তার আল্লাহর সাথে শিরক করছে এমতাবস্তায় মহান আল্লাহ বলেন,
" আমি মানব ও জীন জাতিকে কেবলমাত্র আমার ইবাদতের জন্য সৃষ্টি করেছি।" --[সূরা যারিয়াত,আয়াতঃ ৫৬]

আর এইসব নামধারী মুসলিমদের চিনতে আপনাকে বেশিদূর পড়া সম্ভব না হলেও নিচের আয়াতটি জেনে রাখুন-
"তারা যখন ঈমানদার লোকদের সাথে মিলিত হয় তখন বলে, আমরা ঈমান এনেছি, (আবার) যখন একাকী তাদের শয়তানের সাথে মিলিত হয় তখন বলে, আমরা তো তোমাদের সাথেই আছি, (ঈমানের কথা বলে ওদের সাথে) আমরা ঠাট্টা করছিলাম মাত্র"। (বাকারাঃ১৪)

আমার স্বল্প জ্ঞানের আলোকে এটাই বোঝাতে চাচ্ছি যার 'ধর্মনিরপেক্ষতার' পেছনে ছুটে ইসলামের সাথে প্রতিযোগিতা করছেতারা নিশ্চিত ভুল কাজের মধ্যে আছে। যা অনতি বিলম্বে ত্যগ করে আল্লাহর নিকট ক্ষমা চাওয়া অত্যন্ত জরুরী। আর তাদের সম্পর্কে মহান আল্লাহ বলেন,

إِنَّمَا التَّوْبَةُ عَلَى اللّهِ لِلَّذِينَ يَعْمَلُونَ السُّوَءَ بِجَهَالَةٍ ثُمَّ يَتُوبُونَ مِن قَرِيبٍ فَأُوْلَـئِكَ يَتُوبُ اللّهُ عَلَيْهِمْ وَكَانَ اللّهُ عَلِيماً حَكِيماً

"অবশ্যই আল্লাহ তাদের তওবা কবুল করবেন, যারা ভূলবশতঃ মন্দ কাজ করে, অতঃপর অনতিবিলম্বে তওবা করে; এরাই হল সেসব লোক যাদেরকে আল্লাহ ক্ষমা করে দেন। আল্লাহ মহাজ্ঞানী, রহস্যবিদ।"(সূরা আন নিসা-১৭)

collected from জটিল সমীকরণ(FB)

No comments:

Post a Comment