Sunday, November 25, 2012

লোক দেখানো ইবাদত


“হযরত জুন্দব (রা) থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি তার কৃতকর্মের সুনামের জন্য লোকসমাজে ইচ্ছাপূর্বক প্রচার করে বেড়ায়, আল্লাহ তাআলাও (কিয়ামতের দিন) তার কৃতকর্মের প্রকৃত উদ্দেশ্যের কথা লোকদের জানিয়ে ও শুনিয়ে দেবেন। আর যে ব্যক্তি লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে ও প্রশংসা লাভের উদ্দেশ্যে কোন সৎ কাজ করবে, আল্লাহও (কিয়ামতের দিন) তার প্রকৃত উদ্দেশ্যের কথা লোকদের মাঝে প্রকাশ করে দেবেন।” (সহীহ বুখারী)

আল্লাহপাক মানুষকে সৃষ্টি করেছেন তাঁর ইবাদত করার জন্য। এই ইবাদতের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে তাঁর সন্তুষ্টি অর্জন করা। কিন্তু কখনো কখনো আমাদের ইবাদত হয়ে যায় লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে। লোক দেখানো ইবাদত আল্লাহর কাছে কবুল হয় না। বরং ইবাদতের প্রকৃত উদ্দেশ্যই ব্যাহত হয়। কারণ ইবাদত করার মূল উদ্দেশ্য হবে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করা। এখানে সন্তুষ্টি লাভের পরিবর্তে গুনাহ হওয়ার আশঙ্কাই বেশি থাকে। দৃষ্টান্তস্বরূপ  নামাজের কথাই ধরা যাক। মুসলমান হিসেবে প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা আমাদের জন্য ফরজ। কিন্তু আমাদের সমাজে আমরা দেখতে পাই কেউ কেউ প্রতিদিনের নামাজের পরিবর্তে সপ্তাহে একদিন জুমার নামাজে যায়। যারা এ ধরনের নিয়মিত মুসল্লির পরিবর্তে সাপ্তাহিক মুসল্লি হিসেবে পরিচিত তাদেরকে লোক দেখানো মুসল্লি বলে। আর এ ধরনের লোক দেখানো ইবাদতকারীদের ব্যাপারে কুরআনে বলা হয়েছে, “আফসোস সে সকল মুসল্লির জন্য, যারা তাদের নামাজের ব্যাপারে উদাসীন।” লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে যারা নামাজ পড়ে আল্লাহ তায়ালা তাদের জন্য আফসোস করেছেন।

আর যারা সমাজের লোকেরা বড় বলবে এই উদ্দেশ্যে সৎ কাজ করে, দান সদকা করে কিংবা মানুষের কাছ থেকে প্রশংসা পাওয়ার আশায় নিজেকে লোক সম্মুখে পেশ করে বা কর্ম করে বেড়ায়, কিয়ামতের দিন আল্লাহ তায়ালা তাদের কৃতকর্মের প্রকৃত উদ্দেশ্য লোক সম্মুখে জানিয়ে দেবেন। মানুষের অন্তরের সকল খবর আল্লাহপাক অবহিত। কোনটি নিছক আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে করা আর কোনটি লোক দেখানোর জন্য করা তা তিনি সম্যক অবহিত। তাই আমাদের উচিত কোন মানুষের প্রশংসা পাওয়ার আশায় কিংবা সমাজের লোকেরা ভাল বলবে এই আশায় কোন কাজ না করে শুধুমাত্র আল্লাহপাকের সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে করা।

প্রিয় বন্ধুরা, এসো আমরা লোক দেখানোর জন্য কোন কাজ না করে একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য সৎ কাজ করি।

Thursday, November 22, 2012

Health Benefits of Banana





Banana health benefits are comparable to any other type of fruit. 
In fact, bananas have several positive benefits that many other fruits do not have.Banana is a great source of potassium. If you are taking diuretics take 2 bananas a day to avoid diminution of potassium in the body.

Skin of the banana can be of great aid in removing warts(cover the warts with the inner skin of banana).Banana is a great for people who have high blood pressure because it is low in salt.

A Banana a Day…

Instead of eating an apple each day for optimum health, the adage should state that a banana each day keeps the doctor away. 
The banana health benefits far outweigh those of the apple because it has many more vitamins and nutrients than their round counterparts.

Bananas have two times as many carbohydrates as an apple, five times as much Vitamin A and iron and three times as much phosphorus. In addition, bananas are also rich in potassium and natural sugars. All of these factors combined make the banana a “super food” that is an integral part of a healthy daily regimen.

Bananas Provide Energy

Because of the abundance of vitamins and minerals, bananas are a great source of natural energy. Eating only two bananas will give you enough energy to exercise or workout for an hour and a half. 

Bananas are also ideal for eating during that midday lull when you feel tired and sluggish.Instead of drinking caffeine or having a sugary snack, bananas provide a level of energy that lasts longer without the dramatic crash caused by caffeine.

Potassium is Vital for Performance 

Because they are rich in potassium, bananas help the body’s circulatory system deliver oxygen to the brain. This also helps maintain a regular heartbeat and a proper balance of water in the body. Potassium is also helpful for reducing strokes and regulating blood pressure because of the way it promotes circulatory health.


Bananas Promote Bowel Health

One of the banana health benefits is that they can help stop constipation.
Bananas have a certain type of fiber that helps to restore and maintain regular bowel functions. Instead of using laxatives that might have chemicals or other synthetic substances, bananas are a natural source for lessening the effects of constipation without causing other bowel problems such as diarrhea.

Bananas Can Lift Your Spirits

Bananas have a chemical called tryptophan – the same chemical that turkey contains. This mood regulating substance contains a level of protein that helps the mind relax so you feel happier. 


Eat a Banana during Your Monthly Visitor

Instead of taking pills designed to reduce your menstrual pains, bananas can be a great help. bananas have a level of vitamin B6 that helps to regulate blood glucose level and help your overall mood.

Increase Your Brain Power with Bananas 

In addition to banana health benefits, they can also help you with your mind. 
discusses a study with 200 students who were asked to eat one banana three times a day - breakfast, recess and lunchtime – along with their normal meals.
What they found was that the potassium in the bananas boosted their brainpower and made them more alert during their classes while they followed the regimen.

Eat Bananas after a Night of Partying

The natural ingredients in bananas and their ability to replenish the body’s vitamins make them an ideal way to reduce the effects of a hangover. 
Put a couple bananas in the blender with some plain yogurt and add some honey to sweeten the taste. The fruit tends to calm the stomach and the honey helps to restore the blood sugar levels to normal.
Similarly, bananas can help people who are trying to quit smoking. 
The B vitamins and other minerals that they contain reduce the physical and psychological effects of nicotine withdrawal.

Bananas are Great for Pregnant Women

Because of their calming properties, pregnant women often eat bananas to combat their morning sickness. They also help to replenish the body and restore a healthy blood glucose level. In addition, they also help regulate a pregnant woman’s temperature, although this is mostly used in other cultures that rely more heavily on natural cures. 

Rub the Peel on Mosquito Bites 

Before you throw those peels away, rubbing the inside of it along a mosquito bite will help reduce the itching and swelling that is normally associated with these types of bites. You might even find that it works better than the creams or medications you find at the drugstore.

Bananas Help Soothe Ulcers

As a way to prevent and treat ulcers, bananas help to reduce the acidity that some foods can leave in the stomach.They help reduce the irritation of the digestive system by leaving a protective coating around the inner walls, making it a natural way to promote intestinal health as well.Since they help to neutralize acidity, they are also a great way to get rid of heartburn. They act as a natural antacid and they quickly soothe the burn.

Bananas are Rich in Iron

For people suffering from a deficiency in iron, bananas help to give your body the iron that it needs. As a result, they help promote hemoglobin production so your blood can clot faster in case of a cut or serious injury.

Sunday, November 11, 2012

জাদুঘরের কথা

জাদুঘর বা সংগ্রহালয় বলতে বোঝায় এমন একটি ভবন বা প্রতিষ্ঠান যেখানে পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শনসমূহের সংগ্রহ সংরক্ষিত থাকে। জাদুঘরে বৈজ্ঞানিক, শৈল্পিক ও ঐতিহাসিক গুরুত্বসম্পন্ন বস্তুসমূহ সংগ্রহ করে সংরক্ষিত করা হয় এবং সেগুলি প্রদর্শন আধার বা ডিসপ্লে- কেসের মধ্যে রেখে স্থায়ী অথবা অস্থায়ীভাবে জনসাধারণের সমক্ষে প্রদর্শিত করা হয়।
অতীতকালে জাদুঘরগুলো গড়ে উঠত ধনী ব্যক্তিদের ব্যক্তিগত বা পারিবারিক উদ্যোগে অথবা কোনো প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোগে। এই সব জাদুঘরে সংরক্ষিত থাকত শিল্পকর্ম, দুষ্প্রাপ্য ও আশ্চর্যজনক প্রাকৃতিক বস্তু বা পুরাবস্তু।

জাদুঘর অর্থ
বাংলায় ‌‌‘জাদুঘর’ কথাটি আরবি আজায়বর বা আজায়বানা শব্দটির সঙ্গে তুলনীয়। বাংলায় এই জাদুঘর কথাটির অর্থ হলো, ‘যে গৃহে অদ্ভুত অদ্ভুত পদার্থসমূহের সংগ্রহ আছে এবং যা দেখে মন্ত্রমুগ্ধ হতে হয়।’ এর আরেক অর্থ ‘যে ঘরে নানা অত্যাশ্চর্য জিনিস বা প্রাচীন জিনিস সংরক্ষিত থাকে।’ ইংরেজি ‘museum’ (মিউজিয়াম) শব্দটি এসেছে লাতিন শব্দ থেকে। ইংরেজি বহুবচনে এই শব্দের রূপটি হল ‘museums’ (বা অপ্রচলিত শব্দ ‘musea’)। শব্দটির মূল উৎস গ্রিক শব্দ Ìïõóå?ïí (Mouseion); যার অর্থ গ্রিক পুরাণের শিল্পকলার পৃষ্ঠপোষক মিউজদের মন্দির।


আমাদের যত জাদুঘর
কোনো কিছুর সত্যি ইতিহাস জানতে হলে তো জাদুঘর সবচাইতে ভালো জায়গা। আমাদের দেশেই কিন্তু অনেক জাদুঘর আছে। আজকে চলো আমরা বাংলাদেশের কিছু জাদুঘর ও বিশ্বসেরা আরও কয়েকটি জাদুঘর সম্পর্কে জেনে আসি।

জাতীয় জাদুঘর
ঢাকা শহরের শাহবাগে অবস্থিত এই জাদুঘরটিই আমাদের দেশের জাতীয় ও প্রধান জাদুঘর। এই জাদুঘরটি স্থাপন করা হয়েছিলো ১৯১৩ সালে। অবশ্য এটি তৈরির প্রক্রিয়া আরো আগেই শুরু হয়েছিলো। ১৯০৯ সালে শিলং থেকে ঢাকায় কিছু পুরনো আমলের ঐতিহাসিক মুদ্রা আনা হয়। কিন্তু আনার পর দেখা গেলো ঢাকায় তো কোনো জাদুঘরই নেই। মুদ্রাগুলো রাখা হবে কোথায়? তখনই চিন্তা করা হলো ঢাকায় একটা জাদুঘর স্থাপন করার কথা। বিখ্যাত ব্রিটিশ মুদ্রাগবেষক স্টেপলটন তখন ঢাকায়। তিনি গভর্নর লেনলেট হায়ারকে বলে তখনই এই জাদুঘরটি স্থাপন করার ব্যবস্থা করেন। তবে সবার জন্য উন্মুক্ত করা হলো ১৯১৪ সালে। তখন জাদুঘরটিতে প্রদর্শনীর সামগ্রী ছিলো ৩৭৯টি।
মজার ব্যাপার হচ্ছে, এই সময় কিন্তু জাদুঘরটি শাহবাগে ছিলো না। শুধু তাই নয়, নামটিও জাতীয় জাদুঘর ছিলো না। জাদুঘরটি ছিলো নিমতলীতে, এখন যেখানে রয়েছে এশিয়াটিক সোসাইটি। আর এর নাম ছিলো ঢাকা জাদুঘর। স্বাধীনতার পর ১৯৮৩ সালে জাদুঘরটির নাম পরিবর্তন করে রাখা হলো জাতীয় জাদুঘর। আর নিমতলী থেকে সরিয়ে এটাকে আনা হলো এখন যেখানে আছে, শাহবাগে।
৪ তলা জাদুঘরটিতে মোট গ্যালারি আছে ৪৩টি। সব গ্যালারির নাম বলতে গেলে তোমাদের বিরক্তি লেগে যাবে। আর কী নেই জাদুঘরটিতে! বাংলাদেশের ফুল, ফল, পশু-পাখিদের প্রতিকৃতি, পুরনো দিনের আসবাবপত্র, অস্ত্রশস্ত্র, হাতিয়ার, নকশী কাঁথা, আদিবাসীদের পরিচিতি, ভাস্কর্য, মূর্তি, মুদ্রা – আরো কত কী! তবে এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে আকর্ষণীয় জিনিস কী কী জানো? মসলিন কাপড়ের কথা তো তোমরা জানোই। জাদুঘরে কিন্তু মসলিন শাড়িও আছে কয়েকটা। প্রায় ২৫ লাখ বছর পুরনো গাছের ফসিলও রয়েছে। আছে ১০-১১ শতকের একটা কালো পাথরের দরজা, শের শাহর আমলের মুদ্রা ও টেরাকোটা। আর ১৯৪৫ সালে আমেরিকা জাপানে যে অ্যাটম বোমা ফেলেছিলো সে বোমার কিছু উদ্ধারকৃত অংশও এখানে রাখা আছে।

বরেন্দ্র জাদুঘর
বরেন্দ্র জাদুঘর বাংলাদেশের প্রথম জাদুঘর। রাজশাহীর জমিদার শরৎ কুমার রায় ও তার দুই সহযোগী অক্ষয় কুমার মৈত্র ও রামপ্রসাদ চন্দর তত্ত্বাবধানে ১৯১০ সালে শুরু হলো জাদুঘরটির যাত্রা। নাম রাখা হলো বরেন্দ্র অনুসন্ধান সমিতি। ১৯১৯ সালে শরৎ কুমারের দান


করা জমিতে জাদুঘরটির নিজস্ব ভবনও নির্মিত হলো। তাতে লাইব্রেরিও রাখা হলো। আর ১৯২৩ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে জাদুঘর কর্তৃপক্ষ নওগাঁর পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহারের খননকাজ শুরু করলো। কিন্তু এক দফা খোঁড়াখুঁড়ি করেই সে কাজে ইস্তফা দিলো বিশ্ববিদ্যালয়টি। আর বাকি কাজ জাদুঘর কর্তৃপক্ষ একা একাই শেষ করলো। সেখান থেকে পাওয়া গেলো প্রায় ২৬৫টি ঐতিহাসিক জিনিসপত্র।
১৯৪৭ সালে ভারতবর্ষ বিভাগের পর জাদুঘরটি ভীষণ বিপদে পড়লো। এবারে একে মেডিক্যাল স্কুলই বানিয়ে দেয়া হলো। ১৯৪৯ সাল থেকে ১৯৬১ সাল পর্যন্ত জাদুঘরটির অর্ধেক ভবনকে মেডিক্যাল স্কুল হিসেবেই ব্যবহার করা হয়েছিলো। বলা হয়েছিলো জাদুঘরকে সরকারের হাতে ছেড়ে দিতে হবে। অবশেষে সরকারের সঙ্গে অনেক দর কষাকষির পর ১৯৬৪ সালে কর্তৃপক্ষ জাদুঘরটির দায়িত্ব ছেড়ে দেয় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের হাতে।
জাদুঘরটিতে আছে মোট ৭টি গ্যালারি। প্রথম গ্যালারিতে আছে পাহাড়পুর বিহার থেকে উদ্ধার করা ২৬৫টি ঐতিহাসিক সামগ্রী, যার মধ্যে আছে সংস্কৃত, আরবি ও ফার্সি ভাষায় লেখা অনেক স্ক্রিপ। দ্বিতীয় গ্যালারিতে আছে হিন্দু ও বৌদ্ধদের তৈরি কাঠ ও পাথরের নানা ভাস্কর্য। তৃতীয় ও চতুর্থ গ্যালারিতে আছে বিভিন্ন দেব-দেবীর মূর্তি। পঞ্চম গ্যালারিতে আছে সব বৌদ্ধ ভাস্কর্য। ষষ্ঠ গ্যালারিতে আছে আরবি, ফার্সি, সংস্কৃত ও প্রাচীন বাংলায় বিভিন্ন ঐতিহাসিক ঘটনা লেখা পাথর আর মুসলিম শাসনামলে তৈরি পাথরের ভাস্কর্য। আর সপ্তম গ্যালারিটা একেবারেই নতুন। এই গ্যালারিতে রাজশাহীর আদিবাসী জনগোষ্ঠীর পরিচয় তুলে ধরা হয়েছে।

মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর
মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে তোমাদেরকে আরো বেশি তথ্য জানাতে ঢাকা শহরের সেগুনবাগিচায় ১৯৯৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস আর সে সময়ের নানা দলিলপত্র, ছবি আর অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে সাজানো হয়েছে এই জাদুঘর। মনে রাখবে, এই জাদুঘরটি সরকারি নয়।


এখানে আছে মোট ৬টি গ্যালারি। প্রথম গ্যালারিতে আছে প্রাচীন বাংলার ইতিহাস, ব্রিটিশ শাসন ও পাকিস্তানের স্বাধীনতার কাহিনী। দ্বিতীয় গ্যালারিতে আছে পাকিস্তান আমলের কথা। তৃতীয় গ্যালারিতে আছে মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন গুরুরূপূর্ণ ঘটনা, শরণার্থী ও অস্থায়ী সরকারের কথা। চতুর্থ গ্যালারিতে আছে মুক্তিযুদ্ধের বীরযোদ্ধাদের ব্যবহার্য জিনিসপত্র। পঞ্চম গ্যালারিতে আছে মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যবহার্য অস্ত্র আর তাদের আত্মত্যাগের কাহিনী। আর শেষ গ্যালারিতে আছে পাকবাহিনীর আত্মসমর্পণ ও তার আগে তাদের এবং দোসরদের কাপুরুষোচিত হত্যাকাণ্ডের নিদর্শন।
পুরো জাদুঘরটিতে একসঙ্গে প্রদর্শিত হয় প্রায় ১৩০০টি সামগ্রী। অথচ জাদুঘরের সংগ্রহে আছে প্রায় ১১০০০টি প্রদর্শনীর সামগ্রী। আসলে সব একসাথে প্রদর্শনী করতে আরো অনেক বেশি জায়গার প্রয়োজন। আর সে জন্য মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের নতুন ভবনের কাজ শুরু হচ্ছে।

বিজ্ঞান প্রযুক্তি জাদুঘর
বিজ্ঞানের নানা মজার মজার সব ঘটনা আর মজার মজার সব বিষয় পড়তে তোমরা নিশ্চয়ই ভীষণ মজা পাও। অনেকেই নিশ্চয়ই স্বপ্ন দেখো বড় হয়ে বিরাট বিজ্ঞানী হবে। তোমাদের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রতি আগ্রহ বাড়াতে আর নানা মজার মজার সব বিষয় জানাতেই স্থাপন করা হয়েছে এই বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘর। ১৯৬৬ সালে তৎকালীন পাকিস্তান সরকার এই জাদুঘরটি প্রতিষ্ঠা করেছিলো। এটি তখন ছিলো শাহবাগে, এখন যেখানে পাবলিক লাইব্রেরি আছে সেখানে। আর তারপর জাদুঘরটির ঠিকানা অনেক বারই পাল্টেছে। শেষ পর্যন্ত স্থায়ী ঠিকানা পায় ১৯৮১ সালে। আগারগাঁওতে নিজস্ব জায়গায় নিজস্ব ভবনে থিতু হয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘর।

জাদুঘরটিতে এখন গ্যালারি আছে মোট ৫টি। প্রথমটি হলো ফিজিক্যাল সায়েন্স গ্যালারি। এই গ্যালারিতে আছে সিনেমাস্কোপ, শূন্যে ভাসা বল, কনভেক্স ও কনকেভ আয়নাসহ আরো অনেক মজার মজার বিজ্ঞানের খুঁটিনাটি বিষয়। এছাড়া দুই মহান বাঙালি বিজ্ঞানী সত্যেন বোসের ব্যবহৃত এক্স-রে টিউব আর ড. কুদরত-ই-খুদার ব্যবহার করা বিভিন্ন জিনিসপত্রও আছে এই গ্যালারিতে। পরেরটি হলো ইন্ডাস্ট্রিয়াল টেকনোলজি গ্যালারি। এখানে আছে সেই কবেকার পুরনো প্রিন্টিং মেশিন, অনেক আগের প্লেনের ইঞ্জিন, সাগরের গভীরতা মাপার যন্ত্র ইকোগ্রাফ, গ্রামোফোন, রাডার আর রাডার ডিসপ্লে, কম্পাস, সোলার বিদ্যুতের প্যানেল, বলাকা বিমানের ইঞ্জিন, আরো কত কিছু! তার পরের গ্যালারিটা হলো বায়োলজি গ্যালারি। এখানে আছে অ্যামিবার মডেল, ব্যাক্টেরিয়ার কোষের স্ট্রাকচার, একটা সংরক্ষণ করা গ্যাংগেটিক ডলফিন বা শুশুক, একটা নীল তিমির কঙ্কাল, অনেক পুরনো একটা গাছের ফসিল। আবার মানুষের মগজ, কিডনি, হৃৎপিণ্ডের মডেলও আছে এখানে। চতুর্থ এবং পঞ্চম গ্যালারিটা জাদুঘর কর্তৃপক্ষ কিছুদিন আগে খুলেছে। এটা হলো তথ্যপ্রযুক্তি গ্যালারি। এই গ্যালারিতে আছে বিভিন্ন প্রজন্মের কম্পিউটার। বাংলাদেশের প্রথম কম্পিউটার আইবিএম ১৬২০ ছাড়াও আইবিএম ১৪০১, হানিওয়েল ডিপিএস-৬, আইবিএম পিসিসহ বিভিন্ন প্রজন্মের আরো অনেক কম্পিউটার আছে এই গ্যালারিতে। আর পঞ্চম গ্যালারিতে আছে দেশের বিভিন্ন তরুণ বিজ্ঞানীদের বিভিন্ন প্রজেক্ট। এছাড়াও জাদুঘরে তোমাদের জন্য একটা সায়েন্স পার্কও আছে। এই পার্কটা শুধু তোমাদের জন্যই তৈরি করা হয়েছে। এখানে তোমাদের জন্য আছে মিউজিক্যাল টিউব, আর্কিমিডিয়ামের স্ক্রু, সিমপ্যাথেটিক সুইং, সুইং পেন্ডুলামসহ আরো অনেক মজার মজার খেলার ব্যবস্থা।

চারু কারু শিল্প জাদুঘর
শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন আমাদের দেশীয় ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিবিষয়ক একটি আলাদা জাদুঘর তৈরির চিন্তা করেছিলেন। তার উদ্যোগে ১৯৭৫ সালে প্রাচীন বাংলার গুরুত্বপূর্ণ নগর ও মসলিনের সূতিকাগার ঢাকার অদূরবর্তী সোনারগাঁয়ে প্রতিষ্ঠিত হয় চারু ও কারু শিল্প জাদুঘর। জাদুঘরটিতে মোট গ্যালারি আছে ১১টি। এই গ্যালারিগুলোর মধ্যে আছে কারুপণ্যের গ্যালারি, মুখোশের গ্যালারি, নৌকার বিভিন্ন মডেলের গ্যালারি, স্থানীয় বাদ্যযন্ত্র, পট, টেরাকোটা আর টালির গ্যালারি, ধাতুর কারুপণ্যের গ্যালারি, লোহার কৃষি সরঞ্জামের গ্যালারি, দেশীয় গয়নার গ্যালারি আর বাঁশ, বেতের সরঞ্জাম ও শীতলপাটির গ্যালারি। বাকি তিনটা গ্যালারির দুটোতে গ্রামীণ সংস্কৃতি এবং উপজাতীয় সংস্কৃতিকে তুলে ধরা হয়েছে। অন্য গ্যালারিটি বিভিন্ন সময়ে বিশেষ প্রদর্শনী করার জন্য ব্যবহার করা হয়।
জাদুঘরটি প্রায় ১৫০ বিঘা জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত, যেখানে ৫৫ বিঘার একটি কৃত্রিম লেক আছে। এছাড়া পুকুর, লাইব্রেরি, রেস্টুরেন্ট, গ্রাম, রেস্ট হাউজ, গোডাউন আর ফুল, ফল ও ওষধি গাছের বাগানও আছে জাদুঘরটিতে।

আহসান মঞ্জিল জাদুঘর
আহসান মঞ্জিল ছিলো বাংলার নবাব পরিবারের ভবন। এর জমি আগে ফরাসিরা তাদের বাণিজ্যিক কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করতো। ১৮৩০ সালে বাংলার নবাব পরিবারের খাজা আলিমুল্লাহ এ জমি তাদের কাছ থেকে কিনে নেন। আর ১৮৫৯ সাল থেকে বানানো শুরু করেন আহসান মঞ্জিল। কাজ শেষ হয় ১৮৭২ সালে। তার ছেলে খাজা আহসানউল্লাহর নামে এর নামকরণ করা হয়।

১৮৮৮ সালেই ঢাকার ওপর দিয়ে বয়ে যায় এক প্রলয়ঙ্করী টর্নেডো। তাতে মঞ্জিলের অন্দর মহল বলা যায় ধ্বংসই হয়ে যায়। পুরো অন্দর মহলই আবার নতুন করে বানানো হয়। ১৮৯৭ সালে আবার ক্ষতিগ্রস্ত হয় আহসান মঞ্জিল, এবার ভূমিকম্পে। এবার মেরামত করেন খাজা আহসানউল্লাহ।
মঞ্জিলটির ঐতিহাসিক ও স্থাপত্যগত গুরুত্বের জন্য বাংলাদেশ সরকার ১৯৮৫ সালে আহসান মঞ্জিলকে অধিগ্রহণ করে নেয়। অর্থাৎ, সরকার পুরো মঞ্জিল ও এর আশপাশের জায়গা নিজের দায়িত্বে নিয়ে নেয় এবং সংরক্ষণ করতে শুরু করে। প্রয়োজনীয় সংস্কারকাজ শেষ করে ১৯৯২ সালে এখানে চালু করা হয় আহসান মঞ্জিল জাদুঘর। এই জাদুঘরটি জাতীয় জাদুঘরের অধীনে ও তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হয়।

রংপুর জাদুঘর
রংপুরের অন্যতম ঐতিহাসিক ভবন হলো তাজহাট প্যালেস। মূল শহর থেকে ৩ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে ভবনটি অবস্থিত। ভবনটি নির্মাণ করেন মহারাজা কুমার গোপাল লাল রায়, ২০ শতকের শুরুর দিকে। তিনি অবশ্য কোনো রাজা-জমিদার ছিলেন না, ছিলেন একজন ধনী স্বর্ণকার। বলা হয়ে থাকে তিনি সবার সামনে আসতেন মাথায় একটা রত্নখচিত মুকুট বা তাজ পরে। আর তার সেই তাজ থেকেই ভবনটির নাম হয়েছে তাজহাট প্যালেস।
১৯৮৪ সাল থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত ভবনটি রংপুর হাইকোর্ট হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। ১৯৯৫ সালে আমাদের দেশের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ ভবনটিকে সংরক্ষিত স্থাপনা হিসেবে চিহ্নিত করে। এর ১০ বছর পর ২০০৫ সালে বাংলাদেশ সরকার রংপুর জাদুঘরকে স্থানান্তর করে নিয়ে আসে এই ভবনের দ্বিতীয় তলায়। জাদুঘরটির মূল ঘরে আছে ১০-১১ শতকে নির্মিত অসংখ্য টেরাকোটা আর আরবি ও সংস্কৃত ভাষায় লেখা ম্যানস্ক্রিপ, যেগুলোতে লেখা আছে মহাভারত, রামায়ণ ও কুরআনের কাহিনী। ধারণা করা হয় ম্যানস্ক্রিপগুলোর অধিকাংশই মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেবের আমলের। এ ছাড়া পেছনের ঘরগুলোতে আছে কালো পাথরে তৈরি অনেক দেবদেবীর ভাস্কর্য।

উপজাতীয় সাংস্কৃতিক জাদুঘর
বাংলাদেশের একমাত্র আদিবাসী জাদুঘরটি অবস্থিত রাঙ্গামাটিতে। এটি স্থাপন করা হয় ১৯৭৮ সালে। পরিচালনা করে উপজাতীয় সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট। জাদুঘরটিতে পার্বত্য চট্টগ্রামের সকল আদিবাসীর ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি ধারণ করা হয়েছে।
পার্বত্য চট্টগ্রামে মোট আদিবাসী সম্প্রদায় আছে ১৩টি। এরা হলো – চাকমা, মারমা, তঞ্চঙ্গ্যা, ত্রিপুরা, রাখাইন, চাক, পাক্সেখা, ম্রো, বম, উসুই, খুমি, খিয়াং ও লুসাই। এদের সকলেরই ভিন্ন ভিন্ন ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি আছে। জাদুঘরটিতে তাদের ব্যবহৃত বিভিন্ন জিনিসপত্র তো আছেই, আছে তাদের নিয়ে লেখা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রবন্ধও। জাদুঘরটিতে প্রদর্শনীর জন্য সংরক্ষিত জিনিসপত্রের মধ্যে আছে বিভিন্ন আদিবাসী সম্প্রদায়ের ব্যবহৃত ঐতিহ্যবাহী পোশাক, অস্ত্রশস্ত্র ও হাতিয়ার, মুদ্রা, মূর্তি ও ভাস্কর্য, বাদ্যযন্ত্র, কারুপণ্যসহ আরো অনেক কিছুই। এছাড়াও বিভিন্ন আদিবাসী সম্প্রদায়কে নিয়ে আঁকা অনেক ছবিও আছে জাদুঘরটিতে।

ওসমানী জাদুঘর
আমাদের মুক্তিযুদ্ধে মুক্তিবাহিনীর সর্বাধিনায়ক ছিলেন কর্নেল এমএজি ওসমানী। তার স্মৃতি ও দেশের প্রতি তার অবদানকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণের জন্য সিলেটে তার বাসভবনে স্থাপন করা হয়েছে ওসমানী জাদুঘর। জাদুঘরটি স্থাপন করা হয় ১৯৮৭ সালে। এর আগে থেকেই
অবশ্য সিলেটে তার বাসভবন দেখতে যেতেন অনেকেই। সেখানে তার বাসার সামনে একটা পুকুরও আছে যেটা ওসমানী নিজেই খুঁড়েছিলেন। জাদুঘরটিতে জেনারেল ওসমানীর ব্যক্তিগত ব্যবহার্য জিনিস, তার ছবি, তার ব্যবহৃত সামরিক জিনিসপত্রের পাশাপাশি তার ওপরে নির্মিত নানা শিল্পসামগ্রীও প্রদর্শনীর জন্য সংরক্ষিত আছে।

বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর
ঢাকায় ধানমন্ডির পুরনো ৩২ নম্বর সড়কের বাসাটিতে ১৯৯৭ সালে বাংলাদেশের প্রথম প্রেসিডেন্ট শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতি রক্ষার জন্য গড়ে তোলা হয়েছে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর। এই বাসাটিতে তিনি থাকতেন। সেখানে আছে তার ব্যক্তিগত ব্যবহার্য জিনিস ও ছবি। ১৯৭৫ সালে সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছিলো এই বাসাতেই। তার চিহ্ন এখনও বয়ে বেড়াচ্ছে এই বাসাটি। এর প্রত্যেকটি ঘরেই দেখা যায় সেই কালো রাতের চিহ্ন।

এর বাইরেও আমাদের দেশে আরো অনেক জাদুঘরই আছে। ঢাকার বিজয় সরণিতে সামরিক বাহিনীর নানা ঐতিহাসিক হাতিয়ার ও সশস্ত্র বাহিনীর পরিচিতিমূলক বহু জিনিস আছে সামরিক জাদুঘরে। মুক্তিযুদ্ধে মুজিবনগরে অস্থায়ী সরকার গঠনের ঘটনার ঐতিহাসিক স্থানে স্থাপন করা হয়েছে মুজিবনগর স্মৃতি জাদুঘর। নওগাঁর পাহাড়পুর, বগুড়ার মহাস্থানগড় আর কুমিল্লার ময়নামতিতেও সেসব স্থানের ইতিহাস এবং উদ্ধার করা নানা ঐতিহাসিক দ্রব্যাদি নিয়ে গড়ে তোলা হয়েছে জাদুঘর। বরিশালে শের-ই-বাংলা এ কে ফজলুল হকের বাসায় তার স্মৃতিতে গড়ে তোলা হয়েছে শের-ই-বাংলা জাদুঘর। কুষ্টিয়ায় শিলাইদহ কুঠিবাড়ি আর সিরাজগঞ্জে রবীন্দ্র কাছারিবাড়িতে তার স্মৃতিতে জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। ঢাকার ঐতিহাসিক লালবাগ দুর্গেও আছে একটি জাদুঘর।

বিশ্বসেরা যত জাদুঘর

ল্যুভর মিউজিয়াম
পৃথিবীর বিখ্যাত জাদুঘরগুলোর মধ্যে প্রথমে নাম বলতে গেলে বলতেই হয় ল্যুভর এর কথা। এটি এক সময় দুর্গ হিসেবে ব্যবহার করা হতো। এক সময় ল্যুভর ফ্রান্সের রাজপ্রাসাদ হিসেবেও ব্যবহার করা হতো। কিন্তু বর্তমানে এই জাদুঘরটির সামনে কাচের তৈরি পিরামিড বসিয়ে নতুন রূপ দেয়া হয়েছে। তবে এর ইতিহাস কিন্তু এতে একটুও বদলে যায়নি। এই জাদুঘরে প্রাচীন সভ্যতার শুরু থেকে আধুনিক সভ্যতার অনেক কিছুই রাখা আছে।
এই জাদুঘর প্রতিষ্ঠার ইতিহাসটি বেশ দীর্ঘ। বিভিন্ন রাজা-রাজরার শাসনকাল পেরিয়ে ষোড়শ লুই একটি জাদুঘর প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা অনুসারে ১৭৯৩ সালে তিনি এই জাদুঘরটি উদ্বোধন করেন। এর পর থেকেই ‘ল্যুভর’ ধীরে ধীরে শিল্পের প্রাসাদ হিসেবে গড়ে উঠতে থাকে। এখানে সংগৃহীত আছে পৃথিবীখ্যাত বহু ছবি। প্রতিষ্ঠার পর থেকে এখন পর্যন্ত পর্যটকদের কাছে ফ্রান্সের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ ‘দ্যা ল্যুভর’ ।                                                            বিখ্যাত চিত্রকর লিওনার্দো দ্যা ভিঞ্চির আঁকা মোনালিসাসহ বেশ কয়েকটি বিখ্যাত ছবি রাখা আছে ল্যুভর-এ।
ল্যুভর এর তিনটি উইং – ডেনন, সুলি ও রিচেলিউ। এর ফ্লোর রয়েছে চারটি। মোনালিসার অবস্থান ডেনন উইংয়ের দোতলায়। দর্শনীয় বস্তুর স্থাপনা অনুযায়ী নিচতলার ডেনন উইংয়ে রয়েছে ইউরোপীয়, ইতালীয় ও স্প্যানিশ ভাস্কর্য, মিসরীয় পুরাকীর্তি এবং গ্রিক ও রোমান পুরাকীর্তি। সুলি উইংয়ের কিছু অংশে রয়েছে প্রাচ্যের নিদর্শন এবং কিছু অংশে গ্রিক ও মিসরীয় নিদর্শন। রিচেলিউ উইংয়ের বড় অংশজুড়ে রয়েছে ফরাসি ভাস্কর্যের বিশাল সমাহার।

গিমে জাদুঘর
এটি আরেকটি সমৃদ্ধ জাদুঘর। এ জাদুঘরটি বিশেষভাবে পূর্ব ও দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর প্রত্নসামগ্রী দিয়ে সাজানো হয়েছে। গিমে জাদুঘর তৈরির  পেছনে ছিলেন ফ্রান্সের বিশিষ্ট শিল্পপতি এমিল গিমে। তারই নামানুসারে এই জাদুঘরের নাম করা হয়েছে। তিনি ১৮৭৬ সালে জাপান, চীন, ভারতবর্ষ, মিসর, গ্রিস ভ্রমণ করেছিলেন। এসব দেশ সফরকালে তিনি যে বিপুল পরিমাণ প্রত্নসামগ্রী সঙ্গে নিয়ে এসেছিলেন, সেগুলো জনসম্মুখে প্রদর্শনের জন্য ১৮৭৯ সালে ফ্রান্সে নিজ শহরে একটি জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করেন। পরে প্যারিসে বর্তমান গিমে জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করে সব সংগ্রহই সেখানে স্থানান্তর করেন। প্রতিষ্ঠার এক দশক পর ১৮৮৯ সালে প্যারিসে শুরু হয় গিমে জাদুঘরের নতুন যাত্রা।

মাদাম তুসোর মোমের জাদুঘর
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে অবস্থিত এই জাদুঘরে খ্যাতিমানদের মোমের মূর্তি তৈরি করে রেখে দেয়া হয়। এবং এ কারণেই এই জাদুঘরটি বিখ্যাত। তবে এর শুরুটা কিন্তু ছিল অন্য রকম। ফরাসি বিপ্লবের সময় নিজেই এই সংগ্রহের সূচনা করেন মাদাম তুসো। কাউকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হলে তার কাটা মাথাটিকে দিয়ে মোমের প্রতিকৃতি তৈরি করতেন তুসো। এর মধ্যে সবচেয়ে বিখ্যাত নমুনাটি হচ্ছে প্রথম ফরাসি রাজার কাটা মাথার প্রতিকৃতি।

ব্রিটিশ মিউজিয়াম
প্রচুর সংগ্রহে সমৃদ্ধ এই জাদুঘরে পৃথিবীর পুরো ইতিহাসটাই যেন লুকিয়ে আছে। জাদুঘরটি ১৭৫৩ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয়। পুরো পৃথিবীর বিভিন্ন জায়গা থেকে চিত্রকর্মের বিশাল সংগ্রহ নিয়ে এটি বর্তমানের অন্যতম সেরা মিউজিয়াম। এখানে ৭০ লাখ দর্শনীয় বস্তু আছে। তবে এর মধ্যে ৪০ লাখ মানুষকে দেখানো হয়। প্রতিবছর গড়ে ৬০ লাখ দর্শনার্থী এই জাদুঘর দেখতে যায়। মিসরীয় সভ্যতারও বিশাল সংগ্রহ এখানে আছে।

ভ্যাটিকান জাদুঘর
এই জাদুঘরে ২২ ধরনের আলাদা সংগ্রহশালা আছে। এর মধ্যে বিভিন্ন প্রাচীন সভ্যতা থেকে শুরু করে মিসরীয় চিত্রকর্ম রয়েছে।
বিভিন্ন মানচিত্র এবং আধুনিককালের ধর্মীয় অনেক চিত্রও সংগ্রহশালায় আছে। ক্যাথলিক খ্রিষ্টানদের জন্য বানানো হলেও এই জাদুঘর সবার জন্যই খোলা।

দীর্ঘ ৯ মাইলজুড়ে রোমান ক্যাথলিক চার্চের ভ্যাটিকান সংগ্রহশালা নিয়ে এই মিউজিয়াম। বছরে প্রায় ৪০ লাখ দর্শনার্থী মিউজিয়ামটিতে যান। এই মিউজিয়ামেও লিওনার্দো দ্যা ভিঞ্চি, রাফায়েল এবং মাইকেল অ্যাঞ্জেলোদের মতো বিখ্যাত চিত্রকরদের আঁকা ছবি আছে।

মেট্রোপলিটন মিউজিয়াম অব আর্ট
এই জাদুঘরটি যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে প্রতিষ্ঠিত হয় ১৮৭০ সালে। আধুনিককাল এবং প্রাচীনকাল মিলিয়ে ২০ লাখেরও বেশি দর্শনীয় বস্তু আছে এখানে। এই জাদুঘরে ইসলামী সভ্যতার বিভিন্ন চিত্রকর্ম থেকে শুরু করে ইউরোপিয়ান অনেক কিছুই আছে। বিভিন্ন অস্ত্র এবং বর্মের এই সব চিত্রকর্ম যেন টাইম মেশিনে করে নিয়ে যাবে অতীতকালের ভ্রমণে। বিখ্যাত জার্মান পেইন্টার আলব্রেসট দুরের খোদাই করা অ্যাডাম এবং ইভের মূর্তির জন্যই এই জাদুঘরটি বেশি বিখ্যাত।

ইজিপশিয়ান মিউজিয়াম
ইজিপশিয়ান জাদুঘর বলতে আমরা মিসরীয় জাদুঘরকেই বুঝি। ব্রিটিশ মিউজিয়ামের অনেক সংগ্রহই তো মিসরীয়, মানে মিসর থেকে নিয়ে যাওয়া। তারপরও মিসরের জাদুঘরে যা আছে, তা অতুলনীয়। এখানে আছে ইতিহাস বিখ্যাতদের সমাধি। এমনকি রয়েছে মিসরীয় কিশোর সম্রাট তুতেনখামেন-এর সমাধিও। এই জাদুঘরটির যাত্রা শুরু হয়েছিলো ১৮৫৩ সালে। এখানে ১ লাখ ২০ হাজারেরও বেশি ঐতিহাসিক সভ্যতার প্রত্নসামগ্রী রাখা আছে। প্রাচীন মিসরীয়রাই সভ্যতার সূচনা করেছিলো। সেই সব প্রাচীন সভ্যতার অনেক নিদর্শনই এখনও আছে এই জাদুঘরে। বিখ্যাত সব ভাস্কর্যও রয়েছে এখানে। সিংহ দৈত্যের ভাস্কর্যও আকর্ষণীয় বস্তুগুলোর মধ্যে রয়েছে।

প্রাদো মিউজিয়াম
স্পেনের রাজধানী মাদ্রিদে এই জাদুঘরটি অবস্থিত। এখানে স্পেন সভ্যতার এবং স্পেনের সেরা চিত্রকরদের আঁকা ছবি রয়েছে। বিখ্যাত ইউরোপিয়ান চিত্রকলার বিশাল এক সংগ্রহশালা এই জাদুঘরটি। এখানে বিখ্যাত চিত্রকর ভেলাজকুয়েজের ‘লাস মেনিয়াস’ চিত্রকর্মটি আছে। বিখ্যাত সব চিত্রকরদের আঁকা ছবিতে সমৃদ্ধ এই জাদুঘরটি। পুরো পশ্চিমা চিত্রকর্ম সম্পর্কে জানতে চাইলে এই জাদুঘর আসলেই অনেক কিছু বলে দেবে তোমাকে।

উজিফি গ্যালারি
ইতালির ফ্লোরেন্সে অবস্থিত এই জাদুঘরের চারপাশেই যেন ছড়ানো আছে এর সব দর্শনীয় বস্তু। এর আশপাশে তাকালেই দেখা যায় বিখ্যাত সব ভাস্কর্য। যেন পাথরের জীবন্ত সব মূর্তি চেয়ে চেয়ে দেখছে দর্শনার্থীদের। আর জাদুঘরের  ভেতরে গেলেই দেখা যাবে বিখ্যাত ভাস্কর বোত্তিসেলি-র ‘বার্থ অব ভেনাস’ এবং ‘প্রিমাভেরা’ নামের নয়নাভিরাম ভাস্কর্যগুলো। সেখানে আরো আছে বিখ্যাত চিত্রকর মাইকেল অ্যাঞ্জেলো, লিওনার্দো দ্যা ভিঞ্চির আঁকা ছবি।


-collected and changed

Saturday, November 3, 2012

যে কোন website block করুন আপনার PC থেকে


 আমাদের office or University  তে বিভিন্ন website (বিশেষ করে facebook) বন্ধ করা থাকে। আপনি চাইলেই তা খুলতে বা বন্ধ করতে পারেন খুব সহজে......।

আপনার pc থেকে যে কোন website  বন্ধ করতেঃ

RUN এ টাইপ করুন  C://windows/system32/drivers/etc/hosts
এবার notepade সিলেক্ট করে ok চাপুন
Scroll  করে নিচে যান
এখানে টাইপ করুন
127.0.0.1 যে website block করতে চান তার ঠিকানা
Example: 127.0.0.1  www.facebook.com
 Clt+s চাপুন বা save করুন ।
আপনার pc থেকে কেউ website টি দেখতে পারবে না।

আপনার pc  থেকে বন্ধ ওয়েবসাইট চালু করতেঃ

RUN এ টাইপ করুন  C://windows/system32/drivers/etc/hosts
এবার notepade সিলেক্ট করে ok চাপুন
Scroll করে নিচে যান
127.0.0.1ওয়েবসাইট  মুছে দিন
 Clt+s চাপুন বা save করুন