Sunday, February 19, 2012

প্রতিটি ভালো কাজই সদাকা


হযরত আবু মুসা আশআরী (রা) থেকে বর্ণিত । তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (স) বলেছেন : প্রত্যেক মুসলিমের সদাকা করা জরুরি । লোকজন জিজ্ঞেস করলো, কারো যদি সদাকা করার মতো কিছু না থাকে? তিনি বলেন : সে নিজ হাতে কাজ করবে যাতে সে নিজেও উপকৃত হতে পারে এবং সদাকাও করতে পারে । লোকজন বললো : যদি তা করার সামর্থ্য তার না থাকে কিংবা তা না করে? তিনি বলেন : সে কোনো অভাবী দুর্দশাগ্রস্তকে সাহায্য করবে । লোকজন বললো : সে তাও যদি না করে? তিনি বলেন : ভালো কাজের আদেশ করবে । একজন জিজ্ঞেস করলো : এটাও যদি সে না করে? তিনি বলেন : তাহলে সে যেন খারাপ কাজ থেকে বিরত থাকে । সেটাই হবে তার জন্য সদাকা । (সহীহ বুখারী)
 

সদাকা ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ একটি দিক । সদাকা মানে অন্যকে কোনো কিছু দান করা । কোনো অভাবীর অভাব পূরণ করা ।  কাউকে উৎসাহমূলক কোনো কাজের ক্ষেত্রে সহযোগিতা করা । কোনো অভাবীর অভাব পূরণের জন্য সে ব্যক্তিকে সচ্ছল হতে হবে বিষয়টি তা নয় । বস্তুত এটি নির্ভর করবে তার নিয়ত বা মানসিকতার ওপর । আলোচ্য হাদিসে সদাকার স্তর বর্ণনা করা হয়েছে – কোনো লোক যদি সচ্ছল হয় অর্থাৎ সে যদি সামর্থ্যবান হয়, তাহলে সে অন্যকে সদাকা করবে বা দান করবে । যদি সে সামর্থ্যবান না হয়, তবে সে নিজ হাতে কাজ করবে । এটিই হবে তার জন্য সদাকা । এখানে অন্যের দ্বারা কাজ করানোর ব্যাপারে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে । নিজে কাজ করার ব্যাপারে উৎসাহ প্রদান করা হয়েছে । অর্থাৎ একজন ব্যক্তি অন্যের ওপর নির্ভরশীল না হয়ে নিজের ওপর নির্ভরশীল হবে । এ কাজটিও যদি তার দ্বারা সম্ভবপর না হয় তাহলে সে ভালো কাজ করবে এবং অন্যকে ভালো কাজের আদেশ দেবে । এটিও যদি তার দ্বারা সম্ভব না হয়, তবে সে অন্তত খারাপ কাজ করবে না । অন্যের ক্ষতি হয় এহেন খারাপ কাজ থেকে বিরত থাকবে । এটি হলো সদাকার সর্বনিম্ন স্তর ।
এখানে রাসূল (সা) মূলত একজন ব্যক্তিকে ভালো কাজের উত্তম পদ্ধতি শিক্ষা দিয়েছেন । একজন মানুষ কিভাবে খারাপ কাজ থেকে বিরত থাকতে পারে তার সর্বোত্তম নমুনা শিখিয়েছেন । ভালো কাজ করা সদাকা । কেউ যদি ভালো কাজ করতে না পারে, তবে সে অন্তত খারাপ কাজ করবে না। আর একজন ব্যক্তি যখন খারাপ কাজ থেকে বিরত থাকবে তখন এমনি এমনি তার দ্বারা ভালো কাজ হতে থাকে । তাই আমাদের উচিত রাসূল (সা) আমাদের যে পথ দেখিয়ে গেছেন তার যথাযথ অনুসরণ করা ।

এসো রাসূল (সা) সদাকার ব্যাপারে যে পদ্ধতি শিক্ষা দিয়েছেন আমরা তা অনুসরণ করি ।

গ্রন্থনায় : আবদুল কুদ্দুস মাখন

No comments:

Post a Comment